আট)
১৪ মার্চ শেখ মুজিব ঘোষণা করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা করতে প্রস্তুত। অতপর ১৫ মার্চই ইয়াহিয়া খান ঢাকা চলে আসেন এবং ১৬ মার্চ ১১টায় জেনারেল ইয়াহিয়া ও শেখ মুজিব দেড় ঘন্টা কোন সাহায্যকারী ছাড়া 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক করেন। ১৭ মার্চ একই ভাবে একান্ত বৈঠক হয়- সাহায্যকারী ছাড়া। মুজিব- ইয়াহিয়া তৃতীয় দফা 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক হয় ১৯ মার্চ শুক্রবার। এ দিন রাতে দুই পক্ষের ৩ জন করে উপদেষ্টা আলাদা বৈঠকে মিলিত হন। পরদিন অথ্যাৎ ২০ মার্চ শনিবার আওয়ামীলীগের ৬ জন শীর্ষস্থানীয় সহকর্মী নিয়ে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার সাথে ১৩০ মিনিট আলোচনা করেন এবং পরে তাঁর বাসভবনে সাংবাদিকদের শেখ মুজিব বলেন, "আলোচনায় কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।" তিনি বলেন, "রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথে তিনি এগুচ্ছেন।" ২১ মার্চ ভুট্টো ঢাকা আসেন ১২ জন উপদেষ্টা নিয়ে। জেনারেল ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা শেষে সাবংবাদিকদের তিনি বলেন, "সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে।" ২২ মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ২৫ মার্চ অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষনা করেন। এ সংক্রান্ত দৈনিক পূর্বদেশের প্রতিবেদনটি লক্ষণীয়:
'গতকাল সোমবার ঢাকার প্রেসিডেন্ট ভবনে মুজিব-ভুট্টো-ইয়াহিয়া বৈঠক চলাকালে প্রেসিডেন্ট জনসংযোগ অফিসার বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের কাছে প্রেসিডেন্টের উপরোক্ত ঘোষণা প্রকাশ করেন।'
অর্থটা পরিষ্কার। আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে এবং মুজিব-ভুট্টো-ইয়াহিয়ার সমঝোতার ভিত্তিতেই জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা হয়েছে। লক্ষনীয়, গোলমালটা কিন্তি লেগেছিলো জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করা নিয়েই। প্রথমবার স্থগিতে ছিল আপত্তি। এবার সম্মতি। একই দিনে জেনারেল ইয়াহিয়ার উপদেষ্টা হিশাবে আগত বিশিষ্ট আইনজীবী এ কে ব্রোহী লিখিতভাবে মতামত দেন যে, সামরিক আইন প্রত্যাহার ও ক্ষমতা হস্তান্তরে কোন আইনগত বাধা নেই।
link
Sunday, July 8, 2007
Friday, July 6, 2007
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (৯)
পাঁচ)
২ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও যুব সমাজের পক্ষ থেকে ডাকসু ভিপি আ.স.ম আবদুর রব বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। এই পতাকা উত্তোলনের জন্য শেখ মুজিব ছাত্র নেতাদের যে র্ভৎসনা করেছিলেন- তার প্রত্যক্ষ শ্রোতা ও দর্শক অনেকেই আছেন।
ছয়)
৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্র লীগের জনসভায় ছাত্র লীগের সাধারন সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই জনসভার পর শেখ মুজিব মিছিলে নেতৃত্ব দিবেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বক্তৃতার পর্যায়ে তিনি মিছিল কর্মসূচী বাতিল করেন। স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠই তার কারন কি-না, সেটা গবেষনার বিষয়।
সাত)
৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিব ভাষণ দেন এবং এই প্রথম স্বাধীনতা কথাটি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন: এবাের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। অবশ্য, ভাষণ সমাপ্তিতেই আবার তিনি এর ব্যালান্স করার চেষ্টা করেন- একই সাথে 'জয় বাংলা, জয় পাঞ্জাব, জয় সিন্ধু, জয় বেলুচিস্তান, জয় সীমান্ত প্রদেশ, জয় পাকিস্তান' শ্লোগান দিয়ে। (স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস: দলিলপত্র-এ জয় পাঞ্জাব, জয় সিন্ধু, জয় বেলুচিস্তান, জয় সীমান্ত প্রদেশ, জয় পাকিস্তান- এ কটি স্লোগানের উল্লেখ নেই। এর রহস্য কি? তবে, সে সময়কার পত্র-পত্রিকা এবং যারা জনসমাবেশে ছিলেন, তারাই সাক্ষ্য দিবেন এ সম্পর্কে।)
link
২ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র ও যুব সমাজের পক্ষ থেকে ডাকসু ভিপি আ.স.ম আবদুর রব বিশ্ববিদ্যালয় বটতলায় স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেন। এই পতাকা উত্তোলনের জন্য শেখ মুজিব ছাত্র নেতাদের যে র্ভৎসনা করেছিলেন- তার প্রত্যক্ষ শ্রোতা ও দর্শক অনেকেই আছেন।
ছয়)
৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্র লীগের জনসভায় ছাত্র লীগের সাধারন সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করেন। আগে ঘোষণা করা হয়েছিল, এই জনসভার পর শেখ মুজিব মিছিলে নেতৃত্ব দিবেন। কিন্তু শেষ মুহুর্তে বক্তৃতার পর্যায়ে তিনি মিছিল কর্মসূচী বাতিল করেন। স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠই তার কারন কি-না, সেটা গবেষনার বিষয়।
সাত)
৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিব ভাষণ দেন এবং এই প্রথম স্বাধীনতা কথাটি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন: এবাের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম। অবশ্য, ভাষণ সমাপ্তিতেই আবার তিনি এর ব্যালান্স করার চেষ্টা করেন- একই সাথে 'জয় বাংলা, জয় পাঞ্জাব, জয় সিন্ধু, জয় বেলুচিস্তান, জয় সীমান্ত প্রদেশ, জয় পাকিস্তান' শ্লোগান দিয়ে। (স্বাধীনতা যুদ্ধের ইতিহাস: দলিলপত্র-এ জয় পাঞ্জাব, জয় সিন্ধু, জয় বেলুচিস্তান, জয় সীমান্ত প্রদেশ, জয় পাকিস্তান- এ কটি স্লোগানের উল্লেখ নেই। এর রহস্য কি? তবে, সে সময়কার পত্র-পত্রিকা এবং যারা জনসমাবেশে ছিলেন, তারাই সাক্ষ্য দিবেন এ সম্পর্কে।)
link
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (৮)
চার)
২৮ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব ঘোষণা করেন, "৬ দফা কারো উপর চাপিয়ে দেয়া হবে না।" (He also reiterated his assurance that six point would not be imposed on any one. (Daily The Dawn, 1 March 1971)। উল্লেখ্য, ডন পত্রিকাটির মালিক হচ্ছে কুখ্যাত ২২ পরিবারের অন্যতম হারুন পরিবার। আরো উল্লেখ্য, এই হারুন পরিবারেরই আর একটি প্রতিষ্ঠান আলা ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে শেখ মুজিব বিনা কাজে কিন্তু মোটা বেতনে একটা চাকরি(!) করতেন।
সে যা-ই হোক, ৬ দফার প্রশ্নে শেখ মুজিবের এই নমনীয়তা কেবল যে এ সংক্রান্ত তাঁর পূর্ববর্তী বক্তব্য কিংবা আন্দোলনকারী শক্তির আশা-আকাংক্ষারই পরিপন্থী, তাই নয়, বরঞ্চ পশ্চিম পাকিস্থানীদের কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলারও একটা প্রয়াস এর মধ্যে লক্ষ্য করার মত। অথ্যাৎ, এটা হচ্ছে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি বিশেষ।
link
২৮ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিব ঘোষণা করেন, "৬ দফা কারো উপর চাপিয়ে দেয়া হবে না।" (He also reiterated his assurance that six point would not be imposed on any one. (Daily The Dawn, 1 March 1971)। উল্লেখ্য, ডন পত্রিকাটির মালিক হচ্ছে কুখ্যাত ২২ পরিবারের অন্যতম হারুন পরিবার। আরো উল্লেখ্য, এই হারুন পরিবারেরই আর একটি প্রতিষ্ঠান আলা ইন্সুরেন্স কোম্পানীতে শেখ মুজিব বিনা কাজে কিন্তু মোটা বেতনে একটা চাকরি(!) করতেন।
সে যা-ই হোক, ৬ দফার প্রশ্নে শেখ মুজিবের এই নমনীয়তা কেবল যে এ সংক্রান্ত তাঁর পূর্ববর্তী বক্তব্য কিংবা আন্দোলনকারী শক্তির আশা-আকাংক্ষারই পরিপন্থী, তাই নয়, বরঞ্চ পশ্চিম পাকিস্থানীদের কাছে নিজেকে গ্রহণযোগ্য করে তোলারও একটা প্রয়াস এর মধ্যে লক্ষ্য করার মত। অথ্যাৎ, এটা হচ্ছে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণের প্রস্তুতি বিশেষ।
link
Wednesday, July 4, 2007
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (৭)
পাকিস্থান প্রশ্নে শেখ মুজিব
অসংগতি, স্ববিরোধীতা, কথা ও কাজে গরমিল শেখ মুজিবের সমগ্র রাজনৈতিক জীবনেরই একটি বৈশিষ্ট। তবে, আপাতত: একাত্তর থেকেই শুরু করা যাক:
এক)
১৯৭০-এর নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগের পক্ষে রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী বড় সমাবেশ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭১-এর ৩ জানুয়ারী রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে। এদিন আওয়ামীলীগের টিকেটে নির্বাচিত জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান শেখ মুজিব। এই শপথের শেষ বাক্যটি ছিল: জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান
(সূত্র: দৈনিক পাকিস্তান, ৪ জানুয়ারী, ১৯৭১)
দুই)
এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তানের ভাষ্য:
"দেশের সর্বত্র শান্তি-শৃংঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করিয়া মেখ মুজিব গণতান্ত্রিক বিজয়কে সুসংহত করার স্বার্থে সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের দালালদের বাড়াবাড়ি দমনের জন্য দেশবাসীকে সদাপ্রস্তুত থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, ইউনিয়নে ইউনিয়নে, মহল্লায় মহল্লাহ আওয়ামীলীগ গঠন করুন এবং রাতের অন্ধকারে যাহারা ছোরা মারে তাহাদের খতম করার জন্য প্রস্তুত হোন। রাতের অন্ধকারে যাহারা মানুষ হত্যা করে, সেইসব বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চোরের মত রাতের অন্ধকারে মানুষ হত্যা করিয়া বিপ্লব হয় না। বিপ্লব চোরের কাজ নয়। সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসবাদের দালালদের খতম করার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের বাঁশের এবং সুন্দরী কাঠের লাঠি বানাইবার পরামর্শ দিয়া শেখ সাহেব বলেন, প্রত্যেকের হাতে আমি হয় বাঁশের নয় সুন্দরী কাঠের লাঠি দেখতে চাই।"
উপরোক্ত দুটো ঘটনার প্রথমটিতে অর্থ্যাৎ শপথে 'জয় পাকিস্তান' শ্লোগান দিয়ে স্টষ্টত তিনি পাকিস্তানের প্রতি তার আনুগত্য অক্ষুন্ন রেখেছেন। দ্বিতীয় ঘটনাটিও এই আনুগত্যেরই বর্ধিতাংশ। কেননা, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তথা 'স্বাধীনতা পূর্ব বাংলা' কায়েমের প্রস্তাব তুলে সশস্ত্র যুদ্ধের কর্মসূচী দিয়েছিল যে বিপ্লবীরা, শেখ মুজিবের কাছে তারা হয়েছেন 'সন্ত্রাসবাদী' ও 'সান্ত্রাসবাদের দালাল' এবং স্বাধীনতাকামী এই সন্ত্রাসবাদীদের 'খতম' করার জন্য বাঁশ ও সুন্দরী কাঠের ব্যাপক আয়োজন করেছেন তিনি।
তিন)
একই ভাষণে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য "ধন্যবাদ" জানান। এ সম্পর্কে ঐদিনের পাকিস্তান অবজারভারের প্রতিবেদন:
Sheikh Muzib thanked President Yahiya for fulfilling his (Yahiya's) commitment in holding the elections. However, he said that there was a section among his (Yahiya's) subordinates who are still conspiring to undo the election results.
বক্তব্যটা পরিষ্কার। নির্বাচনি ফলাফল বাস্তবায়নে অর্থাৎ শেখ মুজিব তথা আওয়ামীলীগের কাছে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ইয়াহিয়া খান প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন। তার কিছু অধ:স্তন এটা বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে মাত্র। শেখ মুজিবের এ অভিনন্দন যে যথার্থই অভিনন্দন ছিল তার প্রমাণ জেনারেল ইয়াহিয়াও রেখেছেন- ৩ মার্চ ঢাকার জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহবানের নির্দেশ দিয়ে (১৩ ফেব্রুয়ারি) এবং মন্ত্রী পরিষদ বাতিল করে (২২ ফেব্রুয়ারী)।
---
link
অসংগতি, স্ববিরোধীতা, কথা ও কাজে গরমিল শেখ মুজিবের সমগ্র রাজনৈতিক জীবনেরই একটি বৈশিষ্ট। তবে, আপাতত: একাত্তর থেকেই শুরু করা যাক:
এক)
১৯৭০-এর নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগের পক্ষে রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণী বড় সমাবেশ প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭১-এর ৩ জানুয়ারী রমনা রেসকোর্স (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ময়দানে। এদিন আওয়ামীলীগের টিকেটে নির্বাচিত জাতীয় প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান শেখ মুজিব। এই শপথের শেষ বাক্যটি ছিল: জয় বাংলা, জয় পাকিস্তান
(সূত্র: দৈনিক পাকিস্তান, ৪ জানুয়ারী, ১৯৭১)
দুই)
এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান সম্পর্কে দৈনিক পাকিস্তানের ভাষ্য:
"দেশের সর্বত্র শান্তি-শৃংঙ্খলা বজায় রাখার ব্যাপারে সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করিয়া মেখ মুজিব গণতান্ত্রিক বিজয়কে সুসংহত করার স্বার্থে সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসবাদীদের দালালদের বাড়াবাড়ি দমনের জন্য দেশবাসীকে সদাপ্রস্তুত থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, ইউনিয়নে ইউনিয়নে, মহল্লায় মহল্লাহ আওয়ামীলীগ গঠন করুন এবং রাতের অন্ধকারে যাহারা ছোরা মারে তাহাদের খতম করার জন্য প্রস্তুত হোন। রাতের অন্ধকারে যাহারা মানুষ হত্যা করে, সেইসব বিপ্লবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চোরের মত রাতের অন্ধকারে মানুষ হত্যা করিয়া বিপ্লব হয় না। বিপ্লব চোরের কাজ নয়। সন্ত্রাসবাদী ও সন্ত্রাসবাদের দালালদের খতম করার জন্য প্রত্যেক নাগরিকের বাঁশের এবং সুন্দরী কাঠের লাঠি বানাইবার পরামর্শ দিয়া শেখ সাহেব বলেন, প্রত্যেকের হাতে আমি হয় বাঁশের নয় সুন্দরী কাঠের লাঠি দেখতে চাই।"
উপরোক্ত দুটো ঘটনার প্রথমটিতে অর্থ্যাৎ শপথে 'জয় পাকিস্তান' শ্লোগান দিয়ে স্টষ্টত তিনি পাকিস্তানের প্রতি তার আনুগত্য অক্ষুন্ন রেখেছেন। দ্বিতীয় ঘটনাটিও এই আনুগত্যেরই বর্ধিতাংশ। কেননা, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তথা 'স্বাধীনতা পূর্ব বাংলা' কায়েমের প্রস্তাব তুলে সশস্ত্র যুদ্ধের কর্মসূচী দিয়েছিল যে বিপ্লবীরা, শেখ মুজিবের কাছে তারা হয়েছেন 'সন্ত্রাসবাদী' ও 'সান্ত্রাসবাদের দালাল' এবং স্বাধীনতাকামী এই সন্ত্রাসবাদীদের 'খতম' করার জন্য বাঁশ ও সুন্দরী কাঠের ব্যাপক আয়োজন করেছেন তিনি।
তিন)
একই ভাষণে শেখ মুজিব প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য "ধন্যবাদ" জানান। এ সম্পর্কে ঐদিনের পাকিস্তান অবজারভারের প্রতিবেদন:
Sheikh Muzib thanked President Yahiya for fulfilling his (Yahiya's) commitment in holding the elections. However, he said that there was a section among his (Yahiya's) subordinates who are still conspiring to undo the election results.
বক্তব্যটা পরিষ্কার। নির্বাচনি ফলাফল বাস্তবায়নে অর্থাৎ শেখ মুজিব তথা আওয়ামীলীগের কাছে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতা হস্তান্তরের ব্যাপারে ইয়াহিয়া খান প্রতিশ্রুতি পালন করেছেন। তার কিছু অধ:স্তন এটা বানচাল করার ষড়যন্ত্র করছে মাত্র। শেখ মুজিবের এ অভিনন্দন যে যথার্থই অভিনন্দন ছিল তার প্রমাণ জেনারেল ইয়াহিয়াও রেখেছেন- ৩ মার্চ ঢাকার জাতীয় সংসদের অধিবেশন আহবানের নির্দেশ দিয়ে (১৩ ফেব্রুয়ারি) এবং মন্ত্রী পরিষদ বাতিল করে (২২ ফেব্রুয়ারী)।
---
link
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (৬)
স্বাধীনতা: গণহত্যা: শেখ মুজিব
স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি আর গণতন্ত্র- এই তিন শাশ্বত আকাংক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সুতরাং এ জাতির পিতৃত্বের দাবিদার কোন নেতার মূল্যায়নের জন্য এ তিনটি বিষয়ে তাঁর অবদান অবশ্যই পর্যালোচনার দাবী রাখে।
অতীত ঘটনাপ্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসটি যদি ১৯৭১ সালের সমতলে স্থাপন করে বিচার করা হয়, তাহলে, একথা অস্বীকার করার উপায় থাকে না যে, সমগ্র মুক্তিযুদ্ধে 'শেখ মুজিব' এই নামটির অসামান্য অবদান রয়েছে। গ্রেফতার বরণ নিয়ে নানা কথা উঠলেও তাঁর 'নাম' তথা তাঁর ভাবমূর্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রেরণা হিশাবে কাজ করেছে। কিন্তু তার পাশাপাশি ব্যাক্তি শেখ মুজিবের ভূমিকা কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশ্নের উর্ধ্বে উঠতে পারেনি। কেন পারেনি? কারন ঘটনাপ্রবাহের বাঁকে বাঁকে যে অসংগতি ও স্ববিরোধীতা স্বয়ং শেখ মুজিব তৈরি করে রেখেছেন তার গ্রন্থী উন্মোচিত হয়নি।
link
স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি আর গণতন্ত্র- এই তিন শাশ্বত আকাংক্ষা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষ একাত্তরে সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। সুতরাং এ জাতির পিতৃত্বের দাবিদার কোন নেতার মূল্যায়নের জন্য এ তিনটি বিষয়ে তাঁর অবদান অবশ্যই পর্যালোচনার দাবী রাখে।
অতীত ঘটনাপ্রবাহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসটি যদি ১৯৭১ সালের সমতলে স্থাপন করে বিচার করা হয়, তাহলে, একথা অস্বীকার করার উপায় থাকে না যে, সমগ্র মুক্তিযুদ্ধে 'শেখ মুজিব' এই নামটির অসামান্য অবদান রয়েছে। গ্রেফতার বরণ নিয়ে নানা কথা উঠলেও তাঁর 'নাম' তথা তাঁর ভাবমূর্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রেরণা হিশাবে কাজ করেছে। কিন্তু তার পাশাপাশি ব্যাক্তি শেখ মুজিবের ভূমিকা কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রশ্নের উর্ধ্বে উঠতে পারেনি। কেন পারেনি? কারন ঘটনাপ্রবাহের বাঁকে বাঁকে যে অসংগতি ও স্ববিরোধীতা স্বয়ং শেখ মুজিব তৈরি করে রেখেছেন তার গ্রন্থী উন্মোচিত হয়নি।
link
Tuesday, July 3, 2007
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (5)
এটা ঠিক যে, আওয়ামী লীগের এক বিরাট অংশ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ৬-দফার সঙ্গে আপোষ করে পাকিস্থান রেখেই ক্ষমতায় যাওয়ার পদক্ষেপ গ্রহন করে এবং এক পর্যায়ে আমাদের অজ্ঞাতে শেখ মুজিবকেও তাদের প্রস্তাব মানতে বাধ্য করে। গোলটেবিলের আলোচনার মাধ্যমে পাকিস্থানের কেন্দ্রে আওয়ামীলীগ ও পিপলস পার্টির কোয়ালিশন সরকার গঠনের সি্দ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত গোপন থাকলেও সেদিন আমরা এই সিদ্ধান্ত জেনে ফেলি। সেদিনই রাত ১০ টায় আমরা কয়েকজন ধানমন্ডির এক বাসায় বৈঠক করি এবং দীর্ঘ আলোচনার পর রাত ১টায় আমরা কোরান স্পর্শ করে শপথ গ্রহণ করি যে, কোন অবস্থাতেই কোয়ালিশন সরকার গঠন করতে দেব না। যে স্বাধীন বাংলার পতাকা একবার তুলেছি- তা আর নামানো যাবে না। এই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাত দেড়টায় শেখ মুজিবের বাসভবনে যাই ও তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে সরাসরি একথাই বলি, আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ না করলে আপনার সাথেও আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটবে।
......... আওয়ামী লীগের সবাই যে পালিয়ে গেছে এটা আমি মনে করি না। বাধ্য হয়েই ভারতে যাওয়ার পর অনেকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে কাজ করেছেন- অনেকেই আবার মুক্তিযুদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।
- শাহজাহান সিরাজ
(মুক্তিযুদ্ধকালীন 'স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের' সাধারন সম্পাদক এবং বর্তমান জাসদ (সি) নেতা)
link
......... আওয়ামী লীগের সবাই যে পালিয়ে গেছে এটা আমি মনে করি না। বাধ্য হয়েই ভারতে যাওয়ার পর অনেকে মুক্তিযুদ্ধের সাথে কাজ করেছেন- অনেকেই আবার মুক্তিযুদ্ধ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছেন।
- শাহজাহান সিরাজ
(মুক্তিযুদ্ধকালীন 'স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের' সাধারন সম্পাদক এবং বর্তমান জাসদ (সি) নেতা)
link
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কে কি বলেন? (২)
আসলে পাকিস্থান প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন।
- তোফায়েল আহমদ
২৫ মার্চ 'ক্রাক ডাউনে'র অনেক আগে থেকেই আমরা অস্ত্র সংগ্রহ ও বোমা তৈরি শুরু করি।
- আবদুল মান্নান ভূইয়া
আওয়ামীলীগ নেতৃপৃন্দ দেশকে স্বাধীন করার কোন চিন্তা-ভাবনা করেননি- শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চিন্তা করেছিলেন।
- মেজর (অব:) জলিল
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কোন ব্যাক্তি বা দলের একক অবদান ছিল না।
- আ স ম আবদুর রব
মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামীলীগ দলীয়করন করে ফেলিছিল।
- সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
আওয়ামীলীগের পালানোর প্রস্তুতি ছিল।
- সানজিদা খাতুন
পরিস্থিতি আমাদের যুদ্ধের দিকে এগিয়ে দেয়।
- হাসান ইমাম
২৫ মার্চের আগে পর্যন্ত আওয়ামীলীগ স্বাধীনতাই চায়নি।
- নাসির উদ্দিন ইউসুফ
link
- তোফায়েল আহমদ
২৫ মার্চ 'ক্রাক ডাউনে'র অনেক আগে থেকেই আমরা অস্ত্র সংগ্রহ ও বোমা তৈরি শুরু করি।
- আবদুল মান্নান ভূইয়া
আওয়ামীলীগ নেতৃপৃন্দ দেশকে স্বাধীন করার কোন চিন্তা-ভাবনা করেননি- শেষ মুহূর্তে পর্যন্ত আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের চিন্তা করেছিলেন।
- মেজর (অব:) জলিল
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কোন ব্যাক্তি বা দলের একক অবদান ছিল না।
- আ স ম আবদুর রব
মুক্তিযুদ্ধকে আওয়ামীলীগ দলীয়করন করে ফেলিছিল।
- সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত
আওয়ামীলীগের পালানোর প্রস্তুতি ছিল।
- সানজিদা খাতুন
পরিস্থিতি আমাদের যুদ্ধের দিকে এগিয়ে দেয়।
- হাসান ইমাম
২৫ মার্চের আগে পর্যন্ত আওয়ামীলীগ স্বাধীনতাই চায়নি।
- নাসির উদ্দিন ইউসুফ
link
মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কে কি বলেন?
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক প্রস্তুতি ছিল না, তবে মানসিক প্রস্তুতি ছল।
- আবদুল মান্নান
আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিলাম, তাই আলোচনা চালিয়েছি শেষ পর্যন্ত।
- আবদুর রাজ্জাক
৭১ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার জন্য জনগনকে প্রস্তুতি গ্রহণের কথা বলি, তখন ২৩ মার্চ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে পাকিস্থান দিবস পালন করা হয় এবং আমাদের তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে অভিযুক্ত করে।
- আবুল বাশার
সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করার পূর্ব-প্রস্তুতি মানসিকভাবে নিশ্চয় ছিল।
- মেজর জেনারেল (অব:) সি আর দত্ত
প্রত্যক্ষ যুদ্ধে আওয়ামী লীগের কোন সহকারী নেতাও অংশগ্রহন করেনি।
- হায়দার আকবর খান রনো
link
- আবদুল মান্নান
আমরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিলাম, তাই আলোচনা চালিয়েছি শেষ পর্যন্ত।
- আবদুর রাজ্জাক
৭১ সালে আমরা যখন স্বাধীনতার জন্য জনগনকে প্রস্তুতি গ্রহণের কথা বলি, তখন ২৩ মার্চ আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে পাকিস্থান দিবস পালন করা হয় এবং আমাদের তারা বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে অভিযুক্ত করে।
- আবুল বাশার
সশস্ত্র স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করার পূর্ব-প্রস্তুতি মানসিকভাবে নিশ্চয় ছিল।
- মেজর জেনারেল (অব:) সি আর দত্ত
প্রত্যক্ষ যুদ্ধে আওয়ামী লীগের কোন সহকারী নেতাও অংশগ্রহন করেনি।
- হায়দার আকবর খান রনো
link
একাত্তরের গণহত্যা: আসল নায়ক কে? (৪)
চার)
অবশ্য এর পরেও বলতে হয়, পিতৃত্বের প্রশ্নটা যখন এসেই গেছে- এ সম্পর্কিত আলোচনা (ইংরেজীতে যাকে বলে Critical Appreciation) শুরু হওয়া দরকার। সে আলোচনার উদ্দেশ্য কোনক্রমেই শেখ মুজিবকে অনর্থক হেয় করা নয়; উদ্দেশ্য অনাবশ্যক মুগ্ধতাবোধ কিংবা অবাঞ্চিত বিদ্বেষের আবরণ থেকে প্রকৃত শেখ মুজিবকে উদ্ধার করা এবং জাতির সামনে তুলে ধরা।
পাঁচ)
এই লক্ষ সামনে রেখেই 'সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র' - এর এই ক্ষুদ্র পয়াস। বস্তুত: 'সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র'- এর অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে, আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক বিষয়াদি বিশেষত রাজনীতির গিত প্র-কৃতি, ট্রেন্ড-স্টাইল, ধরন-ধারণ সম্পর্কে কিছুটা আলোকসম্পাত করা- যাতে অতি সাধারন মানুষ থেকে শরু করে অতি বড় পন্ডিত পর্যন্ত সকলেই স্মৃতিতে ঝালাই করে নিজস্ব ভংগিতে রাজনীতি ও সমাজকে মূল্যায়ন করার কিছু উপাদান নাগালের মধ্যে পেতে পারেন।
link
অবশ্য এর পরেও বলতে হয়, পিতৃত্বের প্রশ্নটা যখন এসেই গেছে- এ সম্পর্কিত আলোচনা (ইংরেজীতে যাকে বলে Critical Appreciation) শুরু হওয়া দরকার। সে আলোচনার উদ্দেশ্য কোনক্রমেই শেখ মুজিবকে অনর্থক হেয় করা নয়; উদ্দেশ্য অনাবশ্যক মুগ্ধতাবোধ কিংবা অবাঞ্চিত বিদ্বেষের আবরণ থেকে প্রকৃত শেখ মুজিবকে উদ্ধার করা এবং জাতির সামনে তুলে ধরা।
পাঁচ)
এই লক্ষ সামনে রেখেই 'সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র' - এর এই ক্ষুদ্র পয়াস। বস্তুত: 'সমাজ বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র'- এর অন্যতম লক্ষ্যই হচ্ছে, আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক বিষয়াদি বিশেষত রাজনীতির গিত প্র-কৃতি, ট্রেন্ড-স্টাইল, ধরন-ধারণ সম্পর্কে কিছুটা আলোকসম্পাত করা- যাতে অতি সাধারন মানুষ থেকে শরু করে অতি বড় পন্ডিত পর্যন্ত সকলেই স্মৃতিতে ঝালাই করে নিজস্ব ভংগিতে রাজনীতি ও সমাজকে মূল্যায়ন করার কিছু উপাদান নাগালের মধ্যে পেতে পারেন।
link
Monday, July 2, 2007
একাত্তরের গনহত্যা: আসল নায়ক কে? (৩)
তিন)
বস্তুত শেখ মুজিব বলে নয়, জাতির পতৃত্ব অর্জন করতে হলে যে কোন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবদান এবং ভুল-ভ্রান্তি ও দোষ-ত্রুটির চুলচেরা মূল্যায়ন দরকার। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটা জাতীয় ঐকমত্য (National Concensus) প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল কেউ এরূপ মর্যদায় অভিষিক্ত হতে পারেন। এর বিপরীতে, দেশবাসীকে গালাগালি দিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে ঐ মর্যাদা আরোপ করার চেষ্টা হিতে বিপরীত ফলই কেবল দিবে। শহীদ মিনারে কিংবা ডাকসুতে শেখ মুজিবের ছবি টাংগানোর পরিণতি এবং ঐ পরিণতির তাৎপর্য উপলদ্ধি করলে, সম্ভবত এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যার ব্যাখ্যার অবকাশ থাকে না।
link
বস্তুত শেখ মুজিব বলে নয়, জাতির পতৃত্ব অর্জন করতে হলে যে কোন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অবদান এবং ভুল-ভ্রান্তি ও দোষ-ত্রুটির চুলচেরা মূল্যায়ন দরকার। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটা জাতীয় ঐকমত্য (National Concensus) প্রতিষ্ঠিত হলেই কেবল কেউ এরূপ মর্যদায় অভিষিক্ত হতে পারেন। এর বিপরীতে, দেশবাসীকে গালাগালি দিয়ে বা অন্য কোন উপায়ে ঐ মর্যাদা আরোপ করার চেষ্টা হিতে বিপরীত ফলই কেবল দিবে। শহীদ মিনারে কিংবা ডাকসুতে শেখ মুজিবের ছবি টাংগানোর পরিণতি এবং ঐ পরিণতির তাৎপর্য উপলদ্ধি করলে, সম্ভবত এ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যার ব্যাখ্যার অবকাশ থাকে না।
link
একাত্তরের গনহত্যা: আসল নায়ক কে? (২)
দুই)
মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা। মানুষ হিশাবে, নেতা হিশাবে তাঁর ব্যাক্তিত্বে যেমন বহুগুনের সমাহার ঘটেছে, তেমনি তিনি দোষ-ত্রুটিরও একেবারে উর্ধ্বে ছিলেন, তা নয়। দোষে-গুণেই মানুষ। এহেন বিরল ব্যাক্তিত্বের যেটুকু মর্যাদা পাওনা, ইচ্ছা করলেই তা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যাবে না। আবার যা পাওনা নয়, জোর করে তা আরোপ করাও সম্ভব হবে না। ইতিহাসের নির্মম স্বীকৃতির পরিবর্তে গোটা জাতিকে জারজ সন্তান বানিয়ে পিতৃত্বের আসন দেয়ার চেষ্টার মধ্যে কি গৌরব থাকতে পারে, তা বুঝা সত্যিই মুস্কিল।
link
মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের একজন জাতীয় নেতা। মানুষ হিশাবে, নেতা হিশাবে তাঁর ব্যাক্তিত্বে যেমন বহুগুনের সমাহার ঘটেছে, তেমনি তিনি দোষ-ত্রুটিরও একেবারে উর্ধ্বে ছিলেন, তা নয়। দোষে-গুণেই মানুষ। এহেন বিরল ব্যাক্তিত্বের যেটুকু মর্যাদা পাওনা, ইচ্ছা করলেই তা থেকে তাঁকে বঞ্চিত করা যাবে না। আবার যা পাওনা নয়, জোর করে তা আরোপ করাও সম্ভব হবে না। ইতিহাসের নির্মম স্বীকৃতির পরিবর্তে গোটা জাতিকে জারজ সন্তান বানিয়ে পিতৃত্বের আসন দেয়ার চেষ্টার মধ্যে কি গৌরব থাকতে পারে, তা বুঝা সত্যিই মুস্কিল।
link
Sunday, July 1, 2007
একাত্তরের গনহত্যা: আসল নায়ক কে? (১)
এক) 'যারা বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা স্বীকার করে না তারা জারজ সন্তান' - এই হচ্ছে বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ফর্মুলা। এ সূত্রমতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীসহ বাংলাদেশের এগার কোটি মানুষই জারজ সন্তান। কেননা, আওয়াশীলীগও তাদের সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতির পিতি বলে স্বীকৃত দেয়নি। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা জাতীয় পাখি, জাতীয পশু, জাতীয় ফুল, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত প্রভৃতি সব ব্যাপারেই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছে, কিন্তু জাতির 'পিতৃত্ব' সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি। সে হিসেবে আওয়ামী লীগ তাদের নিজ সূত্রমতে নিজেরাই জারজ সন্তানের পর্যায়ভূক্ত হলেও শালীনতা বোধের কারনে তা বলা যায় না। তবে প্রশ্ন থেকে যায়, ক্ষমতায় থাকাকালে যারা শেখ মুজিবকে পিতৃত্বের মর্যাদা দিতে কুণ্ঠিত ছিলেন, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার প্রায় পনের বছর পর ১৯৯০ সালে এসে সেই পিতৃত্ব জাতির উপর চাপাতে গিয়ে তারা সমগ্র জাতিকে জারজ সন্তান খেতাবে ভূষিত করলেন কেন? তাছাড়া, এই 'জারজ সন্তান'দের পিতৃত্বই বা শেখ মুজিবকে এখন আর কতখানি গৌরবান্বত করবে?
Subscribe to:
Posts (Atom)